মঙ্গলবার ● ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » আইন-শৃংখলা » চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসকের আগে ঔষধ দোকানের দালাল হাজির৷
চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসকের আগে ঔষধ দোকানের দালাল হাজির৷
আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন প্রতিনিধি৷৷
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার আসার পূর্বেই হাসপাতাল সংলগ্ন ঔষধের দোকানের দালাল চক্র এসে হাজির৷ তাদের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত মূল্যে ঔষধ কিনতে হয় রোগীকে৷ এমন প্রতারণার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ৷
সোমবার (১৪সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যানবাহনে করে রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আসা মাত্র দালাল এসে হাজির৷ তারা প্রথমে রোগীকে ধরাধরি করে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে৷ এরপর রেজিস্টার মেইন্টেন, ডাক্তার দেখানো, এমনকি ভর্তি হলে সিট পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন৷ স্বাভাবিকভাবে এমন আচরণ দেখে দালালদের প্রতি সহানুভূতি জন্মায় রোগীর সাথে আসা আত্মীয়-স্বজনের৷ হাসপাতাল থেকে ব্যবস্থাপত্র দেয়ার পর দালাল চক্র কৌশলে বলেন, এখানে আমার আত্মিয়ের দোকান আছে, কম মূল্যে কিনে দিতে পারব, টাকা পরে দিলেও হবে, ঔষধ কিনলে কিনতে পারেন৷ রোগীর আত্মীয় তার সহানুভূতির কথা চিন্তা করে ঔষধ কিনতে চলে যান দালালের নির্দিষ্ট দোকানে৷ শুরু হয় গলাকাটা মূল্যে ঔষধ বিক্রি৷
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, সরকারি হাসপাতাল থেকে যে সকল ঔষধ বা প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী যেমন-কটন, হেক্সিসল, সিরিজ, নরমাল স্যালাইন, সিজার, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি ফ্রী দেয়ার কথা, কিন্তু রোগীর ব্যবস্থাপত্রে এসব আনতে বলা হয়৷ পরে এসকল সামগ্রী জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাগণ সে দোকানেই ফেরত দিয়ে টাকা আনার অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
ভুক্তভোগী চরফ্যাশন পৌরসভা ১নং ওয়ার্ডের মোঃ ইউসুফ বলেন, আমার স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর চরফ্যাশন হাসপাতলে ভর্তি করি৷ প্রথম থেকেই এক দালালের প্ররোচনায় হাসপাতালের পূর্ব পাশের এক দোকান থেকে ঔষধ ক্রয় করি৷ তিন দিন থাকার পর সকল হিসাব-নিকাশ করে দোকানের টাকা পরিশোধ করি৷ প্রয়োজনে একই ঔষধ চরফ্যাশন সদর রোড ফ্রেন্ডস মেডিকেল থেকে ক্রয় করলে দেখা যায়, প্রতি পিস ৮ টাকার ঔষধ ১৮ টাকা, ১৪টাকার ঔষধ ৩৫ টাকা করে রেখেছেন, হাসপাতাল সংলগ্ন দালালের দোকানদার৷ হিসাব করে দেখলাম সর্বমোট ২হাজার ৩শ টাকা অতিরিক্ত রেখেছে৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরফ্যাশন সরকারি হাসপাতালের কর্মরত এক ডাক্তার বলেন, এ দালাল চক্রকে হাসপাতালের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সহযোগিতা করেন৷ এক মাস পূর্বে দালাল চক্রের দুই সদস্য হাসপাতালে ভর্তি খালাকে দেখতে আসা ১২ বছরের কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে৷ সে মামলা এখনো চলমান৷
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও শোভন বসাক দ্বীপ নিউজ২৪ কে জানান, দালালমুক্ত হাসপাতালের জন্য গেটপাস, ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করা হবে৷
আমরা সংশ্লিষ্টদের দালাল প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে প্রমাণসহ অভিযোগ করলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷