সোমবার ● ২৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » আইন-শৃংখলা » তজুমদ্দিনে মেঘনার ভাঙ্গনের শিকার মন্দির স্থানান্তর নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন ॥
তজুমদ্দিনে মেঘনার ভাঙ্গনের শিকার মন্দির স্থানান্তর নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন ॥
তজুমদ্দিন প্রতিনিধি ॥
ভোলার তজুমদ্দিনে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়া দড়িচাঁদপুর চৌ-পল্লী হরি মন্দির স্থানান্তর নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে দুপক্ষের মধ্যে মন্দির স্থানান্তর নিয়ে সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দড়ি চাঁদপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী দড়িচাঁদপুর চৌ-পল্লী হরিমন্দিরটি মেঘনার ভাঙ্গনের কবলে পরে। পরে মন্দিরটি স্থানান্তরের জন্য স্থানীয়রা একাধিকবার বৈঠক করে ১১ সদস্যের একটি মন্দির স্থানান্তর কমিটি করেন। সেই কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বসন্ত ঘোষের বাড়িতে ভাঙ্গনের শিকার মন্দিরটি একই এলাকার উত্তম লস্কর বাড়িতে স্থানান্তরের সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক লস্কর বাড়িতে মন্দির নির্মাণের কাজও শুরু করেন এলাকাবাসী। মন্দির পরিচালনা কমিটি দীর্ঘদিন মন্দিরের খোজ খবর না নেয়ায় স্থানীয়রা পনিচালনার জন্য একটি পাল্টা কমিটি করেন। এ ছাড়া পুরাতন কমিটি মন্দিরের ৭১ হাজার টাকার হিসাব না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করেন। পরে নতুন কমিটির লোকজন পুরাতন মন্দির ভেঙ্গে নতুন মন্দিরের ভান্ডার খানা তৈরী করার মাধ্যমে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন। সরজমিনে দেখা যায়, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আমফানের আঘাতে মন্দিরটির চাল উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় মন্দিরের মধ্যে থাকা প্রতীমাগুলি বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। সাবেক কমিটির লোকজন প্রতীমা হেফাজতের কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যার কারণে বৃষ্টিতে ভিজে প্রতীমাগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন কমিটির লোকজন তা নদীতে ধর্মীয় রীতিতে বিসর্জন দিয়ে দেয় বলেও জানান নতুন কমিটির কোষাধ্যক্ষ জুয়েল।
কিন্তু গত ১৫দিন পূর্বে দড়িচাঁদপুর চৌ-পল্লী হরিমন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি গোপাল ডাক্তার, সম্পাদক সুলিন মাষ্টার ও যুগ্ম সম্পাদক মরন মাষ্টারের নেতৃত্বে ৯নং ওয়ার্ডে একই নাম ব্যবহার করে আরেকটি মন্দির নির্মাণের পায়তারা করছেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি (বর্তমান) লক্ষন বিশ্বাস ও সম্পাদক শংকর দেবনাথ জানান, সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক মিলে আমাদের মন্দিরের পূর্বের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে বে-আইনিভাবে স্থানান্তরের নামে শায়েস্তাকান্দি ৯নং ওয়ার্ডে একটি মন্দির নির্মাণের পায়তারা করছেন এবং মন্দিরের নগদ টাকা না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করছে।
জানতে চাইলে মন্দির কমিটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ দিলীপ ডাক্তার বলেন, পুরাতন মন্দিরের সকল মালামাল লস্কর বাড়িতে রয়েছে। তবুও মন্দির স্থানান্তর নিয়ে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে যে কোন সময় সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। মন্দিরের নগদ টাকা কি করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কীর্ত্তনের ৭১ হাজার টাকা সভাপতি গোপাল ডাক্তারের নিকট রয়েছে।
সাবেক সভাপতি গোপাল ডাক্তার বলেন, ৯নং ওয়ার্ডের শায়েস্তাকান্দি মন্দির স্থানান্তরের বিষয়ে সাবেক কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমি ক্রয় করে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। লস্কর বাড়িতে মন্দির স্থাপন করতে মাত্র ৫-৭ জন লোক রয়েছে। নগদ টাকা তাদের কাছেই রয়েছে বলে জানান। ঘুর্ণিঝড় আমফানের আঘাতে মন্দিরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় মন্দিরের মধ্যে প্রতীমা বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেননি কেন? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি গোপাল ডাক্তার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর মেম্বার জানান, নদী ভাঙ্গনের কবলে পরা মন্দিরটি স্থানান্তরের বিষয়টি আমার উপস্থিতিতে এলাকাবাসীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক লস্কর বাড়িতে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন নতুন কমিটির লোকজন। এই নামে কেউ মন্দির করতে পারবে না করতে হয় অন্য নামে করবে।