মঙ্গলবার ● ২৭ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » আইন-শৃংখলা » তজুমদ্দিনে সংঘর্ষের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
তজুমদ্দিনে সংঘর্ষের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
এম, নুরুন্নবী।।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ইউনিয়নে গত রবিবার ওই ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিবিএস ক্যাবলের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান এবং আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হান্নান এ ঘটনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় অবস্থান করলেও এ ঘটনায় তারা এমপি সাহেবকে বিতর্কিত করতে অপপ্রচার করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেছেন তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দেওয়ান। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তার সাথে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলুল হক দেওয়ান দাবী করেন, শনিবার লালমোহন উপজেলার হরিগঞ্জ বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এঘটনায় লালমোহন থানায় একটি মামলাও হয়। পুলিশের ভয়ে ওই মামলার বেশ কয়েকজন আসামীসহ প্রায় অর্ধশত বহিরাগত লোকজন চাচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ হোসেন হান্নানের বাসায় অবস্থান নেন। বিষয়টি স্থানীয়রা জেনে যাওয়ার পর আসামীরা পুলিশের আতঙ্কে থাকে। এজন্য তারা এলাকায় ভীতিসৃষ্টির জন্য হান্নানের কর্মি ও স্বজনরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আশেপাশে মহড়া দেয়।
রবিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে চাচড়া ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য ফিরোজ উদ্দিন ও যুবলীগ নেতা নাজিম চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে তজুমদ্দিন সদরে রওয়ানা হয়। এই সুযোগে গত ইউপি নির্বাচন কালীন বিরোধের সুত্র ধরে হান্নান চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। ফিরোজ ওই ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহেরের কর্মি হওয়ায় তার সমর্থকরাও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পাল্টা হামলার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি হয়। এসময় ফিরোজকে লক্ষ করে প্রতিপক্ষরা গুলি চালালে তার সাথে থাকা নাজিমউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এরপর বেলা পৌনে ২টার দিকে ৮নং ওয়ার্ড সদস্য সিদ্দিক মিস্ত্রি ও আব্বাস মোল্লা ওই পথে বাড়ি যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো দাবী করেন, এসময় অবরুদ্ধ করে আব্বাস মোল্লাকে চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। একই দিন বেলা আড়াইটায় ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মনির মিয়ার মেয়ে কলেজ ছাত্রী মোহনা আক্তার রিক্সা যোগে বাসায় যাওয়ার পথে হান্নান চেয়ারম্যানের সমর্থকরা তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এসব ঘটনা পুরো ইউনিয়নে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন দোকান ও বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য হান্নান সমর্থকরা রাস্তায় গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এসব ঘটনায় ফিরোজ উদ্দিন ও আব্বাস মেম্বারের শ্বশুর সিদ্দিক মিস্ত্রি বাদী হয়ে তজুমদ্দিন থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। কিন্তু এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের উদ্দেশ্যে বিবিএস ক্যাবল চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হান্নান উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় অবস্থান করলেও এ ঘটনায় তারা এমপি সাহেবকে বিতর্কিত করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এছাড়াও তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়েও তারা মিথ্যাচার করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। এসব মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন সুমন, ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন পোদ্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল্যাহ কিরন, আমিন মহাজন, যুবলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান মিশু, শম্ভুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাসেল মিয়া, জেলা পরিষদের সদস্য ইস্তিয়াক হাসান, কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজ উদ্দিন পারভেজ, চাচড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন প্রমুখ। তারা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।