বুধবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » তজুমদ্দিনে ইলিশ শিকারে শেষ সময়ে জেলেদের প্রস্তুতি
তজুমদ্দিনে ইলিশ শিকারে শেষ সময়ে জেলেদের প্রস্তুতি
এম, নুরুন্নবী
দুইমাস মেঘনায় সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। মাছের প্রজনন বৃদ্দির লক্ষ্যে সরকারের দেয়া এই নিষেধাজ্ঞার শেষ মূহুূর্ত চলছে। বিধি-নিষেধ শেষে নদীতে মাছ ধরতে জাল বুনন ও ট্রলারের মেরামতের মধ্যে দিয়েই শেষ সময়ের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে জেলেরা। পাশাপাশি মাছের আড়ৎগুলোতেও চলছে ধোয়া মোছার পাশাপাশি পুরানো খাতা-পত্র প্রস্তুতের কাজ। দুই মাসের অলস সময়কে ভুলে এখন ঈদের আগ মূহহুর্তে ইলিশ কেনা-বেচার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ভোলার তজুমদ্দিনের প্রায় ১০ হাজার মৎসজীবী ও আড়ৎ মালীক।
উপজেলা মৎস অফিস সুত্রে জানা যায়, জাটকা সংরক্ষণের জন্য ভোলার মেঘনা নদীর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত অভয়াশ্রম ঘোষনা করেছে মৎস ও প্রাণি সম্পদ বিভাগ। অভয়াশ্রমসমূহের কোন এলাকায় ১লা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দুই মাস যেকোন ধরনের মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞার কারনে এ অঞ্চলের শতশত জেলে বেকার হয়ে পরে। এসময়ে নিবন্ধিত জেলেদের পুর্নঃবাসনের জন্য সরকার প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। তাই জেলেরাও পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পরেছে ইলিশ শিকারের জন্য। একারনে সপ্তাহ দুই আগে থেকেই জেলেরা এখন পুরোপুরি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নদীতীর বা মাছঘাটে। মহেষখালী ঘাটের মহিউদ্দিন মাঝির জেলে ট্রলারে চলছে মেরামতের কাজ, অন্য জেলেদের কেউবা আবার তপ্ত দুপুরে অক্লান্ত মনে জাল বুনে যাচ্ছেন। পাশেই ঘাটে বাঁধা শফিক মাঝির ট্রলার। ৩-৪ জন শ্রমিকের হাতের হাতুড়ির ঠুনঠুন শব্দে যে কারোই নজর এড়াবেনা তাতে। ট্রলারের মেরামত কাজে ব্যস্ত সবাই। ২৭ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১ টার মধ্যে উপজেলার মহেষখালী ঘাট, শশীগঞ্জ স্লুইজ ঘাট, চৌমূহনী মাছ ঘাট, বাগানের খালসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে ঘুরে প্রতিটি ঘাটেই এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
শশীগঞ্জ ঘাটের জেলে আঃ হালিম মাঝি জানান, “গত দুইমাস জেলেরা বেকার ছিলো। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে মাছ ধরার জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি। আশা করি, সামনের ঈদের আগে নদীতে অনেক মাছের দেখা পাবো। এজন্য মাছধরা শুরু হলে প্রথম ঘন্টা থেকেই জাল ফেলবো। তাই সকল প্রস্তুতি আরো দুই দিন আগেই সেরে রেখেছি।”
উপজেলা মৎস আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আবুল হাসেম মহাজন জানান, ‘‘দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রস্তুতির জন্য জেলেদের আর্থিক যোগান দিতে হচ্ছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন আগে থেকেই মাছ ধরা শুরু হবে। সেজন্য ব্যবসায়ীরাও তাদের আড়তের পুরনো হিসাবের খাতা প্রস্তুত ও গদিঘর ধোয়া মোছার কাজ শুরু করছেন।’’
উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আমির হেসেন জানান, ‘‘এখানকার মাছ ঢাকা, বরিশাল ও চাঁদপুরের আড়তে প্রচুর পরিমানে বিক্রি হয়। কিন্তু এবার ঈদের আগে ব্যতিক্রম হতে পারে। কারন ঈদের আগে মাছ এসব বড় আড়তে পাঠানোর জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই। তাই এবারের ঈদে স্থানীয় বাজারে সুলভ মুল্যে ইলিশের দেখা মিলতে পারে। ’’