মঙ্গলবার ● ৫ মে ২০২০
প্রথম পাতা » আইন-শৃংখলা » ভারতে অবস্থিত সুরা প্রেমিদের জন্য সুখবর হলেও,গৃহবধূদের জন্য হতাশার সুর,লকডাউনেও বাড়তে পারে ক্রাইমের সংখ্যা।
ভারতে অবস্থিত সুরা প্রেমিদের জন্য সুখবর হলেও,গৃহবধূদের জন্য হতাশার সুর,লকডাউনেও বাড়তে পারে ক্রাইমের সংখ্যা।
টিটব বিশ্বাস ভারতঃ-
ভারতে অবস্থিত সুরা প্রেমিদের জন্য সুখবর হলেও,গৃহবধূদের জন্য হতাশার সুর,বাড়তে পারে ক্রাইমের সংখ্যা।মদের দোকান খুলতেই উপচে পড়ল মানুষের ভিড়,বাধ্য হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লাঠিচার্জ করতে হল পুলিশকে।এদিনের মদের জন্য লম্বা লাইনের ছবি দেখলে মনে হবে এযেন লকডাউনের বাজারে অর্থিক অভাব মেটাতে সরকারের দেওয়া রেশন নেবার জন্য সাধারণ মানুষের লম্বা লাইন আর পুজোয় ঠাকুর দেখার ভীড়।কথিত আছে,’জাতে মাতাল হলেও,তালে কিন্তু ঠিকই আছেন’।গোটা দেশের সঙ্গে কলকাতা থেকে শুরু করে গোটা জেলায় একই ছবি।পাশাপাশি গোটা দেশে চললো মদ কেনার জন্য লম্বা লাইন।মদের দোকানের শাটার খুলতে না খুলতেই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন শয়ে শয়ে সুরা প্রেমি মানুষরা।সোমবার সকাল থেকেই দিনভর এমনই ছবি দেখা গেল গোটা দেশের পাশাপাশি কলকাতা সহ গোটা রাজ্যের একাধিক জায়গায়।
সুরা প্রেমিদের ভিড় হঠাতে বিভিন্ন রুপের আকার ধারণ করে কয়েকটি জায়গায় পুলিশ মানুষকে বোঝাতে দেখা গেলেও অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করতে হয় দুরত্ব বজায় রেখে লাইন নিয়ন্ত্রণের জন্য।কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকায় মদের দোকান খোলায় অনুমতি দেওয়া হয়েছে ঠিকই তবে নির্দিষ্ট বিধি মেনেই প্রতিটি রাজ্যকে তা করতে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।তার অন্যতম দুটি শর্ত– মদের দোকানের সামনে পাঁচ জনের বেশি এক সঙ্গে জড়ো হওয়া যাবে না এবং একজনের থেকে আরও এক জনের দূরত্ব থাকতে হবে নুন্যতম ছ’ফুট।রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মদের দোকান থেকে মদ কেনার জন্য সোমবার সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন কয়েকশো সুরা প্রেমি মানুষ।তাঁদের মধ্যে দু’গজের দূরত্ব তো অনেক দূরের কথা দু’ইঞ্চিও ফাঁকাও জায়গার বালাই নেই একপ্রকার।অনেকটা একজনের ঘাড়ের উপর আরও একজন উঠে পড়ার মতোই অবস্থা।এই পরিস্থিতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হতেই ঘটনাস্থলে যায় বিভিন্ন থানার পুলিশ।লাঠি চালিয়েও ভিড় ফাঁকা করতে গিয়েও হিমসিম খেতে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে।পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কয়েকটি জায়গায় মদের দোকানের মালিককে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশকে।শুধুমাত্র কলকাতার কালীঘাট বা ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারেও একই ছবি দেখা গিয়েছে এই নয় ভারতের রাজধানী দিল্লির মতো শহরেই ছবি ছিল ভীড়ে ঠাসা।কোথায়ও দেখা যায় পুলিশ মাংকি করে লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন।গোটা ঘটনায় রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তারা।তাঁদের অনেকের মতে,এখনই যদি নির্দেশিকা জারি করে মদ বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে আগামী দিনে বড় বিপদ ঘটে যাবে।শুধু কলকাতা নয়,জেলাতেও ছবিটা এক।পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে মদের লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে মদ না মেলায় দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা হয় এদিন। হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমানেও মদের দোকানের বাইরে থিকথিকে ভিড়ের ছবি দেখা গিয়েছে।কোথাও সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই।উত্তর২৪পরগনার বনগাঁ নিউমার্কেট, ট’বাজার,মতিগঞ্জ এবং বিএসএফ ক্যাম্প মোড়, গোপাল নগর বাজার এলাকায় ক্রেতাদের অতিরিক্ত ভিড়ের জন্য পুলিশ মোতায়েতন করতে বাধ্য হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।এমনকি হাবড়া শহরের একাধিক জায়গায় বেশ কিছু মদের কাউন্টার থাকায় ভীড় সামলাতে কার্যত হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে। দুরত্ব বজায় রাখার জন্য চকআউট করে রাস্তার পাশে গোল দাগ কেটে দিলেও আইনের নির্দেশকে বালাইসার।এদিন মদ নিতে আসা কয়েক জন ব্যক্তি তো আবার হাসতে হাসতে বলেই ফেললেন,এতদিন তো ভালোই ছিলাম।যেভাবে লকডাউন বাড়ছে তাই মনে মনে একপ্রকার ভেবেছিলাম মদ খাওয়া হয়তো এবার বুঝি পুরোপুরি ছেড়েই দিতে হবে।কিন্তু এই যে আবার সরকার মদের দোকান খুলে দিলেন তাতেই আবার মাথাটা এক প্রকার বিগড়ে গেলো।আবার সেই মদ খাওয়া শুরু করতে হলো পুনরায় আজ থেকে।তাই মদকে আমরা ছাড়তে চাইলেও মদ মনে হচ্ছে আমাদেরকে আর ছাড়লোনা।কয়েক জন গৃহবধূ তো আবার সোজাসুজি জানিয়ে দিয়েছেন,লকডানের ফলে আমাদের বাড়ির কর্তারা মদ খেতে না পেয়ে কোন রকম ঝামেলা-অশান্তি ছিলনা।মদ খেয়ে এলাকায় চোর-ডাকাতের উৎপাত হয়তো এবার ফের বাড়তে পারে।এই সময় শত অভাবের মধ্যেও চুপিসারে ভালোই সংসার চলছিল।কিন্তু সরকার লকডাউনের মধ্যে হটাৎ মদ চালু করতেই ফের শুরু হবে সংসারেও ঝামেলা-অশান্তি।লকডাউন থাকার ফলে একদিকে কোন রোজগার নেই কারোর পরিবারের,তার মধ্যেই আবার মদ খেয়ে বাড়িতে উৎপাত শুরু করবে বাড়ির কর্তারা।তাই সরকারের এই পদক্ষেপে সুরা প্রেমিরা কিছুটা খুশি হলেও পরিবারের গৃহবধূরা কার্যত সরকারের এই কান্ড দেখে হতাশ।